Inspirational journeys

Follow the stories of academics and their research expeditions

প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিং

ForexShikhon Squad

Sat, 23 Nov 2024

প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিং

ফরেক্স ট্রেডিংয়ে সফল হওয়ার জন্য কৌশল নির্ধারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টেকনিক্যাল ট্রেডিং কৌশলগুলোর মধ্যে প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিং অন্যতম। এই কৌশলটি মূলত বাজারের মূল্য গতিবিধি বিশ্লেষণ করে ট্রেডিং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। আজ আমরা প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিং কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব এবং দেখব কিভাবে এই কৌশলটি ব্যবহার করে লাভবান হওয়া যায়।

প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিং কী?

প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিং এমন একটি কৌশল, যেখানে ট্রেডাররা শুধুমাত্র মূল্য গতিবিধির উপর ভিত্তি করে ট্রেড করেন। অর্থাৎ, অতীতের প্রাইস মুভমেন্ট বা ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যৎ মার্কেট প্রবণতা নির্ধারণ করা হয়। এই কৌশলে কোনো ইন্ডিকেটর ব্যবহার করা হয় না বা খুব কম ব্যবহার করা হয়।

প্রাইস অ্যাকশন কৌশলের প্রধান উপাদানসমূহ

প্রাইস অ্যাকশন কৌশলের কয়েকটি মূল উপাদান রয়েছে, যা মার্কেটের দিক নির্দেশ করে এবং সঠিক এন্ট্রি ও এক্সিটের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে:

১. সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স হলো এমন স্তর যেখানে প্রাইস সাধারণত থামে বা বিপরীত দিকে চলে যায়। সাপোর্ট হলো সেই স্তর যেখানে প্রাইস নিচে নেমে গিয়ে আবার উপরে উঠে। রেজিস্ট্যান্স হলো সেই স্তর যেখানে প্রাইস উপরে উঠে গিয়ে আবার নিচে নামে। এই লেভেলগুলো সঠিকভাবে সনাক্ত করতে পারলে ট্রেডিংয়ের সফলতার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

২. ট্রেন্ড লাইন
ট্রেন্ড লাইন ব্যবহার করে মার্কেটের মূল প্রবণতা সনাক্ত করা যায়। যখন প্রাইস একটি নির্দিষ্ট দিকে ধারাবাহিকভাবে মুভ করে, তখন এই ট্রেন্ড লাইন ট্রেডারদের সঠিক এন্ট্রি পয়েন্ট নির্ধারণে সহায়তা করে।

৩. ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন
ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন হল প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিংয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। কিছু জনপ্রিয় প্যাটার্ন হলো:

  • পিন বার (Pin Bar): এটি একটি বিপরীতমুখী সিগন্যাল দেয়। সাধারণত, যখন একটি পিন বার তৈরি হয়, তখন মার্কেটের ট্রেন্ড পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

  • ইনসাইড বার (Inside Bar): এটি সাধারণত সাইডওয়ে মার্কেটে দেখা যায় এবং বাজার ব্রেকআউটের সম্ভাবনা নির্দেশ করে।

  • এনগালফিং প্যাটার্ন (Engulfing Pattern): এই প্যাটার্নটি শক্তিশালী রিভার্সালের সিগন্যাল দেয় এবং প্রবল প্রবণতার সূচনা নির্দেশ করে।

প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিং কৌশল ব্যবহার করে ট্রেডিং

প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিংয়ের সময় নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন:

১. ট্রেন্ড সনাক্ত করুন
প্রথম ধাপে মার্কেটের ট্রেন্ড সনাক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি আপট্রেন্ড, ডাউনট্রেন্ড, অথবা সাইডওয়ে ট্রেন্ড হতে পারে। ট্রেন্ড সনাক্ত করার পরে, সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো চিহ্নিত করুন।

২. ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন পর্যবেক্ষণ করুন
ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্নগুলো পর্যবেক্ষণ করে বাজারে সম্ভাব্য রিভার্সাল বা ব্রেকআউটের জন্য অপেক্ষা করুন। পিন বার, ইনসাইড বার বা এনগালফিং প্যাটার্ন দেখা দিলে, মার্কেট প্রবেশের প্রস্তুতি নিন।

৩. সঠিক এন্ট্রি এবং এক্সিটের সময় নির্ধারণ করুন
সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স লেভেলে পৌঁছানোর পর, ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন অনুসারে ট্রেডে এন্ট্রি নিন। এন্ট্রি পয়েন্টের ঠিক বিপরীতে স্টপ লস সেট করুন এবং ট্রেন্ডের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। প্রফিট টার্গেট নির্ধারণ করতে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলোর সাহায্য নিতে পারেন।

প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিংয়ের সুবিধা

  • ইন্ডিকেটর নির্ভরতা নেই: প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিংয়ে ইন্ডিকেটর ব্যবহার না করেই বাজার বিশ্লেষণ করা যায়, যা মার্কেটের প্রকৃত গতিবিধি বোঝার সুযোগ দেয়।

  • সহজ এবং কার্যকরী: প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিং কৌশল সহজ, এবং নতুন ট্রেডারদের জন্যও এটি কার্যকরী হতে পারে।

  • অল্প সময়ে সিদ্ধান্ত: এই কৌশলের মাধ্যমে ট্রেডাররা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, কারণ এখানে বিভিন্ন ইন্ডিকেটর বিশ্লেষণের প্রয়োজন হয় না।

চ্যালেঞ্জ এবং ঝুঁকি

যদিও প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিং অনেক কার্যকরী, কিন্তু এটি একা নির্ভরযোগ্য নয়। অন্যান্য ফান্ডামেন্টাল ফ্যাক্টর যেমন নিউজ ইভেন্টস, ইকোনোমিক ডেটা ইত্যাদিও ট্রেডের উপর প্রভাব ফেলে। তাই, প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিংয়ের সাথে সাথে অন্যান্য কৌশলও শিখতে হবে।

সারসংক্ষেপ

প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিং কৌশল ফরেক্স ট্রেডিংয়ে সফল হওয়ার জন্য একটি কার্যকর উপায় হতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি মার্কেটের প্রবণতা এবং সাপোর্ট-রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলিকে সঠিকভাবে বুঝতে পারেন। তবে, সবসময় ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার কথা মাথায় রাখতে হবে এবং নিয়মিত চর্চা করতে হবে। সঠিক কৌশল এবং সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রাইস অ্যাকশন ট্রেডিং আপনার জন্য লাভজনক হতে পারে।

0 Comments

Leave a comment